ওয়েব ডেস্ক: সাক্ষরতা কর্মসূচির নামে অর্থ লোপাট করা হচ্ছে। কাগজে-কলমে কাজ দেখালেও আসলে তারা কিছুই করছে না। প্রধান শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ঝরে পড়ার সংখ্যা বাড়িয়ে অনৈতিকভাবে সরকারি অর্থ ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। খোদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এসব কথা স্বীকার করেছেন।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস-২০২১ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঢাকার প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘অনেকে বলছেন, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। বর্তমানে স্কুল বন্ধ, তাই শতভাগ ঝরে পড়লেও আমরা সেকেন্ড চান্স শিক্ষার মাধ্যমে তাদের স্কুলে নিয়ে আসবো। তবে উপ-আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সাক্ষরতা কর্মসূচির নামে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে অর্থ মেরে (আত্মসাত) খাচ্ছেন, তা বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু বছর শেষে ঢাকঢোল পিটিয়ে অনেক টাকা ঢেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাদের কাজ শেষ হচ্ছে। কাগজে-কলমে তারা অনেক কাজ দেখালেও আসলে কাজের কাজ কিছুই করছেন না। অন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের এনে নাম লিখিয়ে মাস শেষে টাকা নেওয়া বন্ধ করতে হবে। জালিয়াতির অর্থ দিয়ে আপনাদের সন্তান মানুষ হবে না, এ অর্থ খেলে হালাল হবে না।’
ভালো ভালো কথামালা লিখে দিলেও সেসবের কিছুই করা হয় না, সে কারণে তাদের দেওয়া লিখিত বক্তব্য পাঠ করেননি উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু মুখে ভালো কথা বলা বাদ দিয়ে মাঠে নামেন, শরীরটাকে একটু ঘামান। জাতির ক্ষতি করবেন না, জনমানুষের কল্যাণে কাজ করেন। সরকার যে অর্থ দিচ্ছে, তা অপচয় না করে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝরেপড়া শিশুরা নানা ধরনের সমস্যায় থাকে। অন্যের বাসায় কাজ করে তাদের দিন পার হয়। শুধু বর্ণ শেখার জন্য তাদের পাওয়া যাবে না। আর পেলেও তাদের ধরে রাখা যাবে না। যদি তাদের যদি উপকার করতে চান, তবে বর্ণ শেখার সঙ্গে স্কিল ট্রেনিং যুক্ত করে তাদের কর্মদক্ষ করে তুলতে হবে। প্রধান শিক্ষক আর কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে ঝরে পড়ার হার বাড়িয়ে স্বাক্ষরতার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া বন্ধ করতে হবে।’
করোনার মধ্যে কারও বেতন-ভাতা সরকার বন্ধ করেনি, তাই দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে, দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা করাতে হবে। সবার ওপর আমাদের মনিটরিং থাকবে, কেউ ফাঁকি দিয়ে চলতে পারবেন না।’
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) রতন চন্দ্র পন্ডিত। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।